Dr. Bashir Mahmud Ellias's Blog

Know Thyself

মালহামা আরমাগেডান তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পিলে চমকানো ভয়াবহতা

Leave a comment

মালহামা’র  ভয়াবহতা  এবং  দীর্ঘমেয়াদী  ক্ষতিকর  যন্ত্রণাদায়ক  প্রভাব  নিয়া  আজকে  কিছু  আলোচনা  করব ।  বিশ্বনবী (সাঃ)  এই  যুদ্ধের  নাম  দিয়েছেন  মালহামা  অর্থাৎ  বড়  যুদ্ধ  বা  বিশাল  যুদ্ধ  বা  মহাযুদ্ধ ।  বাইবেল  এবং  তাওরাতে  ইহার  নাম  দেওয়া  হয়েছে  আরমাগেডন,  কারণ  সিরিয়ার  আরামগ  নামক  স্থান  থেকে  এটি  শুরু  হবে ।  যারা  ধর্ম  বিশ্বাস  করেন  না  তাদের  মতে   ইহার  নাম  হলো  তৃতীয়  বিশ্বযুদ্ধ  বা  পারমাণবিক  যুদ্ধ ।  মালহামা  কেনো  হবে  এবং  মালহামা  কেনো  খুব  শীঘ্রই  হওয়ার  সম্ভাবনা  আছে  এই  ব্যাপারে  কোনো  আলোচনা  করতে  চাই  না ।  কারণ  এই  ব্যাপারে  বিশেষজ্ঞদের  অনেক  বড়  বড়  গবেষণামূলক  প্রবন্ধ  আছে,  যাদের  দরকার  পড়ে  নিতে  পারেন ।  ভয়ঙ্কর  এই  যুদ্ধের  পরে  মানবজাতির  ৫  ভাগ  অথবা  ১০  ভাগ  হয়ত  বেঁচে  যাবেন  আর  বাকীরা  সবাই  কবরে  চলে  যাবেন ।  কারণ  ইহা  হবে  এটম  বোমা  হাইড্রোজেন  বোমার যুদ্ধ,  হাজার  হাজার  এটম বোমা  হাইড্রোজেন  বোমা  তাতে  নিক্ষেপ  করা  হবে ।   নুরনবী (সাঃ)  বলেছেন,  দুই  দলের  মধ্যে  এই  যুদ্ধ  হবে  এবং  দুই  দলের  ৯৯  ভাগ  লোক  তাতে  নিহত  হবে ।  এই  দুই  দল  হলো  একদিকে  এশিয়া  মানে  চীন  রাশিয়া  এবং  অন্য  দিকে  থাকবে  ইউরোপ-আমেরিকা ।  বাইবেলে  বলা  হয়েছে  ভালো  এবং  মন্দের  মধ্যে  এই  যুদ্ধ  হবে ।  বাস্তবেই  এশিয়া  হলো   ভালোর  দলে  আর  ইউরোপ-আমেরিকা  হলো  খারাপের  দল ।  ইউরোপ-আমেরিকা  হলো  ডাকাতের  দল, স্বৈরাচারের  দল । 

মূল  যুদ্ধটা  মানে  বোমা  বর্ষণ  বিশ  ত্রিশ  মিনিটের  মধ্যেই  শেষ  হয়ে  যাবে  যাতে  দুইশ  তিনশ  কোটি  মানুষের  নগদ  মৃত্যু  হবে ।  বোমার  নীচে  পড়ে  আগুনে  জ্বলেপুড়ে  বা  বিল্ডিংয়ের  নীচে  চাপা  পড়ে  যেই  মৃত্যুটা  হবে  তা  হবে  কিছুটা  আরামদায়ক,  কারণ  অল্পসময়ের  মধ্যে  মৃত্যু  হয়ে  যাবে ।  অন্যদিকে  যারা  বোমার  হাত  থেকে  বেঁচে  যাবে  তাদের  মৃত্যুটা  হবে  ভীষণ  যন্ত্রণাদায়ক  কষ্টদায়ক  নারকীয়  মৃত্যু ।  আল্লাহ  আমাদের  সবাইকে  হেফাজত  করুন,  আমিন ।  এমন  করুণ  মৃত্যু  আমার  শত্রুরও  যেন  না  হয় ।  সারা  দুনিয়ায়  এটম  বোমার  হাইড্রোজেন  বোমার  তেজস্ক্রিয়  ধোঁয়া  ছড়িয়ে  পড়বে  এবং  থাকবে  কয়েক  মাস  থেকে  বছর  পর্যন্ত ।  এই  ধোঁয়াগুলো  মেঘের  সমান  উচুতেঁ  উঠবে (mashroom  cloud) ।  ফলে  যে-সব  পাহাড়  পর্বত  মেঘের  চাইতে  উঁচু  তাতে  যারা  বসবাস  করবে  তারাই  কেবল  সেই  ধোঁয়ার  হাত  থেকে  রক্ষা  পাবে ।  এজন্য  নবী  করীম (সাঃ)  বলেছেন,  শেষ  যুগের  ঈমানদারগণ  গরু-ছাগল  নিয়ে  পাহাড  অথবা  নদী  এলাকায়  চলে  যাবে ।  এই  ধোঁয়াতে  নিঃশ্বাস  নিয়ে  মানুষ  ক্যানসার  নিউমোনিয়াসহ  মারাত্মক  মারাত্মক  রোগে  আক্রান্ত  হবে ।  বোমা  ছাড়াও  তারা  তৈরী  করে  রেখেছেন  করোনাভাইরাসের  চাইতেও  আরো  মারাত্মক  জীবাণু  যা  শত্রুদের  উপর  নিক্ষেপ  করবে ।   মানুষ  একসাথে  শরীরের  পাঁচ  দশ  জায়গায়  ক্যানসারে  আক্রান্ত  হবে ।  সুরা  দোখান  বা  ধোঁয়া  নামে  কোরআনে  একটি  সুরাই  আছে  যাতে  বলা  হয়েছে  একদিন  সারা  আসমান  ধোঁয়ায়  ঢেকে  যাবে  আর  তা  হবে  মানুষের  জন্য  এক  ভয়াবহ  যন্ত্রণাদায়ক  শাস্তি । 

দেখুন  কোরআনে  এটম  বোমা  বিস্ফোরণের  কথাকে  কোনো  গুরুত্বই  দেওয়া  হয়নি  বরং  গুরুত্ব  দিয়ে  বলা  হয়েছে  কেবল  এটম  বোমার  ধোঁয়ার  কথা ।  কারণ  বোমা  বিস্ফোরণের  চাইতে  বেশী  মানুষ  মরবে  ধোঁয়ার  কারণে  এবং  বোমা  বিস্ফোরণের  চাইতে  মানুষ  বেশী  কষ্ট  পাবে  শাস্তি  পাবে  ধোঁয়ার  কারণে ।  এই  ধোঁয়ার  কারণে  সূর্য  ঢেকে  যাবে  অনেক  দিনের  জন্য  এবং  পৃথিবীতে  সূর্যের  আলো  পেৌঁছবে  না  কয়েক  মাস ।  ফলে  পৃথিবীর  তাপমাত্রা  নেমে  যাবে  হিমাঙ্কের  নীচে (nuclear  winter),  সারা  দুনিয়ায়  বরফ  পড়ে  যাবে ।  পৃথিবীর  জলবায়ু  পাল্টে  যাবে,  বৃষ্টি  কমতে  কমতে  বন্ধ  হয়ে  যাবে  কয়েক  বছরের  জন্য ।  ফলে  সূর্যের  আলোর  অভাবে  এবং  বৃষ্টির  অভাবে  গাছপালা  এবং  জমির  ফসল  নষ্ট  হয়ে  যাবে  এবং  কয়েক  বছর  ফসল  উৎপাদন  কমতে  কমতে  একেবারে  বন্ধ  হয়ে  যাবে ।  এসবের  পাশাপাশি  চলতে  থাকলে  ধর্মীয়  এবং  অভাব-অনটনের  কারণে  খুনখারাবি  মারামারি  কাটাকাটি ।  এবার  চিন্তা  করুণ  একজন  মারাত্মক  ক্যানসার  রোগী  একজন  মারাত্মক  অসুস্থ  মানুষ  ডাক্তার  নাই  ঔষধ  নাই,  সাথে  আছে  ক্ষুধার  কষ্ট,  পিপাসার  কষ্ট,  প্রচণ্ড  শীতের  কষ্ট,  সাথে  আবার  শত্রুর  অত্যাচার । 

মাসের  পর  মাস  বছরের  পর  বছর  এমন  বিভৎস  নারকীয়  কষ্ট  ভোগ  করতে  করতে  মৃত্যুর  কোলে  ঢলে  পড়বেন  শত  শত  কোটি  বনী  আদম ।  রাশিয়া  এমন  বোমাও  তৈরী  করেছে  যা  সমুদ্রে  নিক্ষেপ  করলে  একশ  ফুট  উঁচু  ঢেউ  এসে  সবকিছু  ভাসিয়ে  নিয়ে  যাবে ।  হাজার  হাজার  এটম  বোমা  হাইড্রোজেন  বোমার  আঘাতে  ভূমিকম্প  হবে  অন্তত  লক্ষ  বার ।  এখনকার  এটম  বোমা  এতো  শক্তিশালী  যে,  ঢাকা-দিল্লী-লন্ডন-নিউ  ইয়র্কের  মতো  বড়  শহরকে  ধ্বংস  করতে  একটা  বোমাই  যথেষ্ট ।  রাশিয়ার  কাছে  এমন  মিসাইল  আছে  যার  একটির  ভিতরেই  বারটি  এটম  বোমা  থাকে,  যার  একটি  মারলেই  ফ্রান্স  বা  জার্মানীর  মতো  একটি  বড়  দেশ  মানচিত্র  থেকে  মুছে  যাবে ।  বিশেষজ্ঞদের  মতে,  মালহামার  পরে  বেশীর  পক্ষে  হয়ত  বিশ  পঞ্চাশ  কোটি  মানুষ  বেঁচে  থাকতে  পারে,  বাকী  সাতশ  আটশ  কোটি  সবাই  কবরে  চলে  যাবেন ।  বিশেষজ্ঞদের  মতে,  মালহামা  হবে  এমন  ভয়ঙ্কর  যুদ্ধ  যেমনটা  মানবজাতি  আগেও  কখনো  দেখেনি  এবং  পরেও  কখনো  দেখবে  না ।  এটম  বোমা  আছে  এমন  দেশগুলো  মালহামাতে  নিশ্চিহ্ন  হয়ে  যাবে  যেমন – আমেরিকা,  রাশিয়া,  ব্রিটেন,  ফ্রান্স,  চীন,  ভারত,  পাকিস্তান  ইত্যাদি  এবং  এদের  কাছাকাছি  অবস্থিত  দেশগুলি ।  মোটামুটি  আরব  দেশগুলো   এবং  তাদের  কাছাকাছি  কিছু  দেশ  ছাড়া  পৃথিবীর  বাকী  দেশগুলো  এমনভাবে  ধ্বংস  হবে  যে  সেগুলোতে  মানুষ  বসবাসের  উপযুক্ত  থাকবে  না ।  এসব  দেশেগুলোতে  যারা  বেঁচে  থাকবেন  তারা  জীবন  বাঁচাতে  মধ্যপ্রাচ্যের  দিকে  চলে  যাবেন ।  অনেকে  যুক্তি  দেখান  যে,  পারমাণবিক  যুদ্ধ  যেহেতু  অতীতে  কখনো  হয়নি,  কাজেই  সেই  যুদ্ধে  কেমন  ক্ষয়ক্ষতি  হবে  সেটা  নিশ্চিত  করে  বলা  যায়  না ।  যুক্তি  ঠিক  আছে  তবে  একশ  ভাগ  না  হলেও  নব্বই  ভাগ  নিশ্চিত  করে  বলা  যায় ।  কারণ  আমাদের  সামনে  আছে  জাপানের  হিরোশিমা  এবং  নাগাসাকীর  মডেল ।  দ্বিতীয়  বিশ্বযুদ্ধে  জাপানের  এই  দুটি  শহরে  এটম  বোমা  নিক্ষেপ  করা  হয়েছিল ।  জাপানে  যেই  ধরনের  এটম  বোমা  নিক্ষেপ  করা  হয়েছিল  এখনকার  এটম  বোমাগুলি  তার  চাইতে  এক  হাজার  থেকে  পঞ্চাশ  হাজার  গুণ  বেশী  শক্তিশালী ।  অন্যদিকে  দ্বিতীয়  বিশ্বযুদ্ধে  জাপানের  ঘটনাটি  ছিল  স্থানীয়  পর্যায়ের  আর  মালহামাতে  সেটি  হবে  বিশ্বব্যাপী । 

এবার  আসি  মালহামার  সময়  বাংলাদেশের  কি  অবস্থা  হবে  তার  আলোচনায় ।  বাংলাদেশে  কি  কোনো  এটম  বোমা  হাইড্রোজেন  বোমা  নিক্ষেপ  করা  হবে ?  উত্তর  হলো  ‘না’ ।  কারণ  বাংলাদেশ  পারমাণবিক  অস্ত্রধারী  আমেরিকা-রাশিয়া-চীন-ভারত-পাকিস্তান  সবার  সাথেই  বন্ধুত্বপূর্ন  সম্পর্ক  বজায়  রেখে  চলে ।  কাজেই  তাদের  কারো  এটম  বোমার  টার্গেটে  বাংলাদেশ  নাই ।  আমাদের  মনে  রাখতে  হবে  যে  এটম  বোমার  অধিকারী  দেশগুলো  কেবল  অন্য  এটম  বোমার  অধিকারী  দেশকেই  সাধারণত  টার্গেট  করে  থাকে ।  দ্বিতীয়  কথা  হলো  অন্য  দেশকে  টার্গেট  করে  নিক্ষেপ  করা  এটম  বোমা  যান্ত্রিক  ত্রুটির  কারণে  বা  অন্য  কোনো  ভাবে  বাংলাদেশে  এসে  পড়ার  সম্ভাবনা  আছে  কিনা ?  উত্তর  হলো  ‘না’ ।  কারণ  এটম  বোমা  সাধারণত  দুই  পদ্ধতিতে  নিক্ষেপ  করা  হয় (১)  আন্তঃমহাদেশীয়  ব্যালেস্টিক  ক্ষেপনাস্ত্রের  মাধ্যমে (ICBM) এবং  (২)  জঙ্গী  বিমানের  মাধ্যমে ।  প্রথমত  ক্ষেপনাস্ত্রগুলোতে  কমপিউটার  সেট  করা  থাকে  যেগুলো  তাকে  নির্দিষ্ট  স্থানে  চালিয়ে  নিয়ে  যায় । 

এদেরকে  চলার  পথ  দেখিয়ে  নিয়ে  যায়  মহাশূণ্যে  স্থাপিত  সামরিক  সেটেলাইট ।  সে-সব  সেটেলাইট  ধ্বংস  না  করে  এসব  মিসাইলকে  ভুল  পথে  নিয়ে  যাওয়া  সম্ভব  না ।  রাশিয়া  বর্তমানে  এমন  মিসাইল  তৈরী  করেছে  যেগুলো  সেটেলাইটের  সাহায্য  ছাড়াই  নির্দিষ্ট  গন্তব্যে  পেৌছাতে  পারে ।  তাছাড়া  এসব  মিসাইল  ঘণ্টায়  হাজার  হাজার  মাইল  গতিতে  ছুটে  যায়,  কাজেই  দূর  থেকে  কোনো  টেকনোলজির  মাধ্যমে  সেগুলোকে  ভূল  পথে  নিয়ে  যাওয়ার  কল্পনাই  করা  যায়  না ।  দ্বিতীয়তঃ  জঙ্গীবিমানের  মাধ্যমে  যে-সব  এটম  বোমা  নিক্ষেপ  করা  হবে  সেগুলো  একজন  পাইলট  চালিয়ে  নিয়ে  যাবেন ।  পাইলটকে  সরকার  যেখানে  বোমাবর্ষণের  হুকুম  দিবেন  সে  সেখানেই  বোমাবর্ষন  করবে ।  পাইলটকে  ঘুষ  দিয়ে  বা  অন্য  কোনো  উপায়ে   এক  জায়গার  বদলে  অন্য  জায়গায়  বোমাবর্ষণ  করার  আশা  করা  যায়  না ।  কাজেই  আমাদের  মৃত্যু  হবে  এটম  বোমার  আগুনে  নয়  বরং  এটম  বোমার  ধোঁয়ায়  যা  হবে  অনেক  বেশী  কষ্টদায়ক  যন্ত্রণাদায়ক  বিভীষিকাময় ।  আল্লাহ  আমাদের  সবাইকে  রক্ষা  করুন,  আমিন ।  – বশীর  মাহমুদ  ইলিয়াস

Author: bashirmahmudellias

I am an Author, Design specialist, Islamic researcher, Homeopathic consultant.

Leave a comment